আবাস যোজনার টাকা বন্ধ! তালিকা থেকে নাম বাদ গেল এরাজ্যের 27 জনের। আপনার নাম নেই তো? দেখে নিন।

২৭ জনই অযোগ্য ২৯ জনের তালিকায়। আবাস আবাস যোজনার দুর্নীতির চেহারাটা এমনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিডিও আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমে ২৭ জনকে ৭ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে নোটিশ পাঠিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে, সংখ্যাটা ঠিক কত দাঁড়াতে পারে জেলায় সমস্ত পঞ্চায়েতে এমন সমীক্ষা হলে? আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ করে তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দক্ষিণ ২৪ পরগনার নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দা।

আবাস যোজনা কাদের নাম বাদ গেল?

বিচারপতি সেই মামলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে তদন্ত করে অযোগ্যদের টাকা ফেরত নিতে নির্দেশ দেন। জেলা শাসকের দফতরে আদালতের নির্দেশের সঙ্গে ২৯ জনের তালিকা এসে পৌঁছয়। তালিকা ধরে আর্থিক সমীক্ষা করে বিডিও দেখেন, ২৭ জনই ভুয়ো তালিকার ২৯ জনের মধ্যে। এদিকে আবাস যোজনার ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে জমা পড়েছে গত ৬ নভেম্বর তাদের প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

৩টি অ্যাকাউন্ট বেনামি তদন্তে উঠে এসেছে এদের মধ্যে। নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলি প্রধানের শ্বশুরেরও তালিকায় নাম রয়েছে। বিডিও নোটিশ পাঠিয়েছে, প্রত্যেককে ৭ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে। এর আগে একই রকম দুর্নীতি ধরা পড়েছিল নামখানা গ্রাম পঞ্চায়েতে। হাইকোর্ট স্নেহাশিস গিরি নামে এক ব্যক্তির করা মামলায় দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দেয়।তাতে উঠে আসে, দোতলা বাড়ির মালিক, এমনকী পঞ্চায়েতের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী পর্যন্ত আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন।

অনেকে বাড়ি করেননি টাকা পেয়ে। ওদিকে যোজনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বহু যোগ্য মানুষ। আবাস যোজনার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে দিল্লি পর্যন্ত গিয়ে ধরনা দিয়ে এসেছে তৃণমূল। ওদিকে বিজেপির দাবি, গোটা রাজ্যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে আবাস যোজনায়। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই মিটিয়ে দেওয়া হবে বকেয়া।

প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার মেয়াদ বাড়াল কেন্দ্র সরকার, কত দিন আরও পাবেন ফ্রী রেশন?

বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, “অমূলক নয়, তা বোঝা গেল তৃণমূল অধ্যুষিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আবাস দুর্নীতির চিত্রে।” উল্লেখ্য,লোকেরা PMAY-এর অধীনে ভর্তুকি নিয়েছে কিন্তু বাড়ি তৈরি করেনি এমন দৃষ্টান্তগুলি দৃঢ়ভাবে খেয়াল করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিহারে, এই ধরনের 889 টিরও বেশি কেস সনাক্ত করা হয়েছে।

এই ক্ষেত্রে, সুবিধাভোগীরা ভর্তুকি পেয়েছিলেন কিন্তু অর্থ অন্যত্র ব্যয় করেছেন। বিহারের বাগাহা মহকুমায়, সুবিধাভোগীরা ভর্তুকির পরিমাণ নিয়েছেন কিন্তু অর্থ অন্যত্র ব্যবহার করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে এই ধরনের সুবিধাভোগীদের নোটিশ জারি করতে বলেছে। অনেক সময় দেখা যায়, টাকা পাওয়ার পরেও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি। এতে কেন্দ্র ও উপভোক্তারা উভয়েরই লোকসান। তার মধ্যে ভিড় করেছে দুর্নীতির ঘটনা।

তাই এই নিয়ে খানিকটা কড়া হতেই তৎপর হল নবান্ন। বাড়তি তিন মাসের মধ্যে ঘর না বানালে পরবর্তী আবাস যোজনার কোটা পেতে অসুবিধা হতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা প্রশাসনিক কর্তাদের। নবান্ন অবশ্য দাবি জানিয়েছে, বাড়ি তৈরিতে দেরির কারণ উপভোক্তাদের কারও কারও গড়িমসি এবং কিস্তির টাকা দেরিতে দেওয়া হয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার ৪০ দিনের মধ্যে বাড়ি তুলে জানলা নির্মাণ করতে হবে।

ভোটের আগে, বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরি ও মাসে 8000 টাকা দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার।

পরবর্তী কিস্তির ৩৫ দিনের মধ্যে কাজ ‘লিন্টেল’ বা জানলার উপরিভাগ বানিয়ে ফেলতে হবে। প্রসঙ্গত, যেসব সুবিধাভোগী প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি নেওয়া সত্ত্বেও বাড়ি নির্মাণ করেননি, তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। রাজ্য সরকার এই ধরনের সুবিধাভোগীদের পঞ্চায়েতভিত্তিক তালিকা তৈরি করছে। PMAY হল কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্ল্যাগশিপ সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন প্রকল্প। এর অধীনে, যোগ্য আবেদনকারীরা বাড়ি তৈরির জন্য নেওয়া হোম লোনের সুদের উপর ভর্তুকি পাবেন।