সমব্যথী প্রকল্পে আবেদন করলে মিলবে ২০০০ টাকা অনুদান। কিভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন।

রাজ্যের সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার বরাবরই এগিয়ে এসেছে। যার কারণে রাজ্য সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গের বসবাসকারী শিশু, মহিলা, কৃষক, বয়সপ্রাপ্ত নাগরিক থেকে শুরু করে বেকার যুবক-যুবতী পর্যন্ত সকলের জন্যই বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প চালু করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই সমস্ত প্রকল্পগুলি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে না জানার কারণে রাজের নাগরিকরা এইসকল প্রকল্পের সুবিধা পান না। আর রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এমনই এক প্রকল্প হল সমব্যথী প্রকল্প।

রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ জনগণ ২০০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ জনগণের মধ্যে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। যার জেরে এই প্রকল্পটি নতুন করে চর্চায় আসার পর থেকেই কেন এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে, কাদের এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান প্রদান করা হয়, কিভাবে এই প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করা সম্ভব তা জানতে রীতিমতো উৎসুক হয়ে উঠেছেন সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ।

সমব্যথী প্রকল্প:-

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র, অনগ্রসর শ্রেণীর আর্থিকভাবে অসহায় মানুষগুলির পরিবারে মৃত্যুশোকের ছায়া নেমে আসলেও অর্থের অভাবে তারা মৃত আত্মীয়ের শেষকৃত্য টুকুও সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেন না। আর তাই পশ্চিমবঙ্গবাসী দরিদ্র জনগণের সুবিধার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে সমব্যথী প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে সমব্যথী প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গবাসী দরিদ্র জনগণ তাদের মৃত আত্মীয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য অনুদান পাবেন। অর্থাৎ দুঃস্থ পরিবারগুলির মানুষের শেষকৃত্য যাতে সম্মানের সাথে পালন করা সম্ভব হয় তার জন্যই রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রকল্পটি লঞ্চ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে লঞ্চ হওয়ার পর থেকে বহুদিন পর্যন্ত এই প্রকল্পটি চর্চায় আসেনি। তবে বর্তমানে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কার্যকরী হওয়া এই প্রকল্পটি ধীরে ধীরে সমগ্র জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

সমব্যথী প্রকল্পের আওতায় কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?

সমব্যথী প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী দরিদ্র নাগরিকরা তাদের প্রিয়জনের মৃত্যুর পর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য এককালীন ২০০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রকল্পের মত এই প্রকল্পের অনুদানের টাকা আবেদনকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হয় না, রাজ্য সরকারের তরফে মৃত ব্যক্তির নিকট আত্মীয়ের হাতে সরাসরি এই ২ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন:- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান? তবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন এই খাবারগুলি

সমব্যথী প্রকল্পের আওতায় আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে কি কি শর্ত আরোপ করা হয়েছে?

১. কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী নাগরিকরা এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
২. এই প্রকল্পের অধীনে অনুদানের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি শেষকৃত্য পশ্চিমবঙ্গের অভ্যন্তরেই করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের কোন নাগরিক যদি দেশের অন্য কোনো রাজ্যে মারা যান এবং উক্ত রাজ্যেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় তবে তার পরিবার এই প্রকল্পের আওতায় অনুদানের টাকা পাবেন না। অন্যদিকে ভিন্ন রাজ্যের কোন নাগরিক যিনি পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছেন এবং এই রাজ্যেই মারা গিয়েছেন তার পরিবারও সমব্যথী প্রকল্পের আওতায় অনুদান পাবেন না।
৩. শুধুমাত্র আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীর ব্যক্তিদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার ক্ষেত্রেই এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান প্রদান করা হবে।
৪. মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য অথবা যেকোন নিকট আত্মীয়কেই এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে যেসকল ব্যক্তির কোন নিকট আত্মীয় নেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য প্রতিবেশীরাও এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।

সমব্যথী প্রকল্পের আওতায় আবেদন জানাবেন কিভাবে?

এই প্রকল্পের আওতায় অনুদানের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অথবা নিকট আত্মীয়কে একটি সাদা কাগজে অনুদানের জন্য আবেদন জানিয়ে প্রয়োজনীয় নথিগুলি সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দপ্তরে জমা করতে হয়, তাহলেই এই প্রকল্পের আওতায় ২,০০০ টাকার অনুদান পাওয়া সম্ভব।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথিপত্র:-

১. মৃত ব্যক্তির আধার কার্ড
২. মৃত ব্যক্তি যে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন তার প্রমাণ পত্র
৩. ডেথ সার্টিফিকেট

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সমব্যথী প্রকল্পের জন্য আবেদন জানালে যত দ্রুত সম্ভব উক্ত আবেদন এবং নথিপত্রে ভেরিফিকেশন করা হবে। ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে মৃত ব্যক্তির নিকট আত্মীয় অথবা পরিবারের সদস্যদের ২০০০ টাকার অনুদান প্রদান করা হবে।

Leave a Comment