চাকরি না করেই ঘরে বসে পেতে পারেন পেনশন। ভীষণ অবাক লাগলেও বিষয়টা কিন্তু সত্যি। আর সেই সুযোগ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প (Government Pension Scheme)। বর্তমানে চতুর্দিকে এই প্রকল্পের কথা আলোচিত হতে থাকে। সরকারের পেনশন প্রকল্পগুলির মধ্যে এটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ৬০ বছর বয়সের পর সাধারণ মানুষ যারা সরকারি চাকরি করেন না, অথবা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত তাঁরাও ঘরে বসে পেনশন পাবেন।
কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন দেশের আমজনতা। সরকারের এই প্রকল্প (Government Pension Scheme) প্রবীণ বয়সে আমজনতার আর্থিক ভরসার কারণ হয়ে উঠবে। সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পের (Government Pension Scheme) মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে আর্থিক সাহায্য পাবেন। তাই অবশ্যই জেনে নিতে হবে এই প্রকল্পের আবেদন যোগ্যতা, নিয়ম-কানুন এবং আবেদনের পদ্ধতি। কেন্দ্রের এই সরকারি প্রকল্পটি (Government Pension Scheme) সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব আজকের এই প্রতিবেদনে।
Government Pension Scheme 2024
দিল্লির সিংহাসনে ক্ষমতা আসার পর থেকে মোদি সরকার একের পর এক জনকল্যাণকারী প্রকল্প এনে হাজির করেছেন। প্রত্যেকটি প্রকল্প আলাদা আলাদা ভাবে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষকে সাহায্য করে চলেছে। এই সকল স্কিম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সরকারি পেনশন স্কিম (Government Pension Scheme)। পেনশন স্কিম এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কোন চাকরি না করলেও মাসে মাসে পেনশন পেতে পারবেন (Government Pension Scheme)।
আর এই প্রকল্পের হাত ধরে উপকৃত হবেন সমাজের বহু সংখ্যক মানুষ। এই লক্ষ্যেই রূপায়ণ করা হয়েছে প্রকল্পটি। আসলে আমাদের দেশে সরকারি চাকরিতে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের সংখ্যা নিতান্তই কম। বদলে প্রাইভেট সেক্টর, অসংগঠিত ক্ষেত্র, ও অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় হাতে গোনা প্রাইভেট কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ প্রাইভেট কোম্পানি রিটায়ার্ড কর্মীদের পেনশনের ব্যবস্থা করে না।
তাই অবসর গ্রহণ করার পর আর্থিক সমস্যা তাঁদের সামনে এসে দাঁড়ায়। চাকুরীরতরা ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের পেনশন পাওয়ার আশা থাকে না। প্রবীন অবস্থায় তাঁদের যাতে অসুবিধা সম্মুখীন না হতে হয়, জীবন সচ্ছল থাকে তার জন্যই পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। চালু হয়েছে পেনশন প্রকল্প। এই প্রকল্পে অল্প অল্প করে টাকা জমাতে হবে আগের থেকেই।
একটা সময়ের পর যখন ব্যক্তির ৬০ বছর বয়স হয়ে যাবে তখন তিনি মাসে মাসে নির্দিষ্ট টাকার পেনশন পাবেন। ব্যক্তি কত টাকার পেনশন নিতে চান, সেটাও কিন্তু নির্ভর করবে তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর। প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকার পেনশন পেতে পারবেন। আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক কেন্দ্রীয় সরকারের এই স্কিমের নাম, প্রকল্পের আবেদনযোগ্যতা এবং আবেদন পদ্ধতি।
Atal Pension Yojana 2024
কেন্দ্রীয় সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প অটল পেনশন যোজনা (Atal Pension Yojana)। ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার অটল পেনশন যোজনা প্রকল্পের সূচনা করেন। বয়সকালে প্রত্যেক মানুষের জীবন যাতে সচ্ছলভাবে অতিক্রান্ত হয়, তাঁরা যাতে কোন আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন না হন, তাঁদের পেনশন দেওয়ার জন্য দেশের কেন্দ্রীয় সরকার অটল পেনশন যোজনা (Atal Pension Yojana) স্কিমটি আরম্ভ করেছিলেন।
ইতোমধ্যে এই স্কিমের গ্রাহক সংখ্যা ২৮ লক্ষ ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে সরকারি ক্ষেত্রে কর্মরতরা ছাড়া সবাই তালিকাভুক্ত হতে পারবেন। প্রত্যেকে হয়ে উঠবেন পেনশন গ্রাহক। তবে তার আগে এই প্রকল্পের জন্য সঠিক নিয়মকানুন মেনে আবেদন জমা করতে হবে।
আপনি যদি কোন চাকরি নাও করেন যদি আপনি ব্যবসা কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত থাকেন তাহলেও অটল পেনশন যোজনা প্রকল্প আপনাকে ৬০ বছর অতিক্রম হতে না হতেই প্রতি মাসে পেনশন পাঠাবে। তবে শুধুমাত্র পেনশন নয় এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করলে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সুযোগ -সুবিধা।
Atal Pension Yojana Eligibility 2024
- কেন্দ্রীয় সরকারের অটল পেনশন যোজনায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
- এই যোজনায় নাম নথিভুক্ত করা ব্যক্তির বয়স হতে হবে অন্তত পক্ষে আঠেরো বছরের উপরে।
- আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।
- অটল পেনশন যোজনায় আবেদনকারী যেন আয়কর প্রদানকারী না হন।
- একবার টাকা রাখলেই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবেনা।
- প্রকল্পের সুবিধা পেতে অন্ততপক্ষে ২০ বছরের জন্য টাকা জমাতে হবে।
- আবেদনকারী ব্যক্তি যেন সরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত না থাকেন। বাকি সমস্ত ক্ষেত্রে কর্মরতরা এই প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।
- আধার কার্ড লিঙ্ক রয়েছে এমন ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে, যিনি আবেদন করছেন তাঁর।
- অটল পেনশন যোজনা প্রকল্পে আবেদন জানানোর জন্য বিভিন্ন ডকুমেন্ট লাগবে। প্রত্যেকটি ডকুমেন্ট যেন বৈধ হয়।
Atal Pension Yojana Application 2024
অটল পেনশন যোজনা প্রকল্পে আবেদন জানাতে হলে আপনার নিকটবর্তী ব্যাংকের শাখায় চলে যান। সেখানে গিয়ে প্রকল্পের অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ফর্ম নেবেন এবং সেটি যথাযথভাবে ফিল আপ করে জমা দিয়ে দেবেন। আবেদনপত্র জমা দেওয়া হলে মাসে মাসে আপনাকে টাকা জমাতে হবে।
যখন আপনার ৬০ বছর হয়ে যাবে তখন সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে চলে আসবে পেনশনের টাকা। তবে অফলাইন পদ্ধতি ছাড়াও অনলাইনে আবেদন জানানো যায়। এর জন্য আপনাকে প্রকল্পের জন্য অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করে এপ্লিকেশন জমা দিতে হবে। এছাড়া প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে পেয়ে যাবেন।