পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা হল প্রাইমারি টেট পরীক্ষা(Primary TET). প্রতিবছর প্রাইমারি টেট(Primary TET) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন লাখ লাখ পরীক্ষার্থী। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানান অসন্তোষ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যে কারণে বেশ ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের ফলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অচলাবস্থা! এর মাঝে আয়োজিত হয়েছিল ২০২২ সালের টেট পরীক্ষা(Primary TET). জটিলতার কাটিয়ে আয়োজিত হওয়া টেট পরীক্ষা নিয়েও ওঠে বহু অভিযোগ। এরই মাঝে আদালত ২০২২ সালের টেট পরীক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়ছে! সেপ্টেম্বরের ‘এই’ তারিখে আসছে DA বৃদ্ধির ঘোষণা
Primary TET Exam 2022
২০২২ সালে রাজ্যের প্রাইমারি স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এবার নতুন করে প্যানেল প্রকাশ-এর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই নতুন প্যানেলটি হতে চলেছে দ্বিতীয় প্যানেল(Primary TET). নিঃসন্দেহে টেট মামলায় আদালতের এই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এদিন শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিংহ নির্দেশ দেন, মামলাকারী প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ ডিগ্রিকে মান্যতা দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।
প্রাইমারি টেট(Primary TET) সম্পর্কিত একটি মামলায় এই গুরুত্বপুর্ণ নির্দেশটি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আর এর জন্য এবার দ্বিতীয় প্যানেল প্রকাশ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। অর্থাৎ, এবার টেট মামলা কারীরা বিকল্প ডিগ্রির ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর! পড়াশোনা শেষ করলেই চাকরি দিচ্ছে সরকার! মুখ্যমন্ত্রী নিলেন নতুন উদ্যোগ
Calcutta Highcourt Order On Primary TET Exam 2022
এই মামলার আবেদনকারী আনিকুল ইসলাম-সহ বেশ কয়েকজন চাকরি প্রার্থীর দাবি ছিল, তাঁদের দুই ধরনের প্রশিক্ষণ ডিগ্রি আছে। তাঁরা প্রথমে যে ডিগ্রি দেখিয়ে আবেদন করেছিলেন, পরে সে ডিগ্রি বাতিল হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। বর্তমানে বিকল্প ডিগ্রির ভিত্তিতে প্রাইমারির নিয়োগে অংশ নেওয়ার জন্য পর্ষদের কাছে আবেদন করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। আর এবার হাইকোর্ট মঞ্জুর করল তাঁদের আবেদন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বহু জটিলতার পর ২০২২ সালের টেট পরীক্ষা নেওয়া হয় ১২ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের বার্তা দিয়ে। সেই নিয়োগে অংশগ্রহণ করেছিলেন রাজ্যবাসী বহু পরীক্ষার্থী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জেরে বিষয়টি আরো জটিল হয়ে দাঁড়ায়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয় ফর্মে ‘বিএড’ লেখা পরীক্ষার্থীদের। যার বিরোধিতা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পরীক্ষার্থীরা। হাইকোর্ট এই পরিপ্রেক্ষিতে রায় দিয়েছিল মামলাকারীদের পক্ষে সায় দিয়েই।
এই বিষয়টি উল্লেখ করে আদালত বলেছিল, যেহেতু পরীক্ষার্থীদের ডিএলএড প্রশিক্ষণ রয়েছে, তাই তাঁদের ফর্মগুলিকে ডিএলএড (D.El.Ed) পরিবর্তন করে নেওয়া হোক। যদিও বা পর্ষদ সেই নির্দেশ মানেনি। উল্টে, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় পর্ষদ। তাঁদের যুক্তি ছিল, প্রাথমিকের প্রশিক্ষণ ডিএলএড. কিন্তু বিএডনয়।
তাই সে কথা জানা সত্ত্বেও পরীক্ষার্থীরা ফর্মে ‘বিএড’ উল্লেখ করেছেন। তারপরেও তাঁদের সুযোগ কেন দেওয়া হবে? তবে পর্ষদের তরফে এই যুক্তি শীর্ষ আদালতে গ্রাহ্য হয়নি। অবশেষে এবার কলকাতা হাইকোর্ট পর্ষদকে সরাসরি নির্দেশ দিল, নতুন প্যানেল প্রকাশ করার জন্য। কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, বিকল্প প্রশিক্ষণ ডিগ্রিকে মান্যতা দিয়ে মামলাকারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ করে দেওয়া প্রয়োজন।