জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত নতুন বিল কার্যকর করা হলো। নতুন আপডেট।

নতুন অর্থবর্ষ শুরু হতে না হতেই সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে জন্ম সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সংশোধনী বিল পেশ করা হলো। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সূত্রের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিগত বুধবার লোকসভায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন (সংশোধনী) বিল পেশ করেছেন। ইতিপূর্বে সমগ্র ভারত জুড়ে নাগরিকদের জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন অফ বার্থ অ্যান্ড ডেথ অ্যাক্ট, ১৯৬৯ কার্যকরী ছিল কিন্তু বর্তমানে এই নিয়মে পরিবর্তন আনার খাতিরে রেজিস্ট্রেশন অফ বার্থ অ্যান্ড ডেথ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৩ পেশ করা হলো। ইতিমধ্যেই জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত এই নতুন বিল নিয়ে সমগ্র ভারতের সাধারণ জনগণের মধ্যে নানাবিধ চর্চার সূত্রপাত ঘটেছে। আর তাই আজকের এই পোস্টে আমরা জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত এই নতুন বিল সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি।

সরকারি সূত্রের তরফে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে যে, জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত এই নতুন বিলে সমগ্র দেশের সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে ভারতে বসবাসকারী যেকোনো ব্যক্তি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জন্ম সার্টিফিকেট এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। সমস্ত তথ্য এবং নথি ঠিক থাকলে আবেদনকারী ব্যক্তিকে ৭ দিনের মধ্যে জন্ম সার্টিফিকেট কিংবা মৃত্যু সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে। এর পাশাপাশি জন্ম এবং মৃত্যুর সার্টিফিকেট সংক্রান্ত নতুন বিলে বার্থ সার্টিফিকেটকেই যথেষ্ট শক্তিশালী করে তোলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী দিনে লোকসভায় এই বিলটি পাস হয়ে গেলে বার্থ সার্টিফিকেটের মাধ্যমে একগুচ্ছ কাজ করতে পারবেন ভারতীয় নাগরিকরা।

জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত নতুন বিল কার্যকরী হলে বার্থ সার্টিফিকেটের মাধ্যমে কি কি কাজ করা সম্ভব হবে?

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সংশোধনী বিল কার্যকর করা হলে আগামী দিনে শুধুমাত্র জন্ম সার্টিফিকেটের মাধ্যমেই যেকোনো শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা সম্ভব হবে, এক্ষেত্রে জন্ম সার্টিফিকেট ছাড়া অন্য কোনো নথিপত্র প্রয়োজন হবে না। অন্যদিকে জন্ম সার্টিফিকেটের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যও আবেদন করা যাবে। অন্যদিকে যেসকল নাগরিকরা ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানাবেন ভোটার তালিকার আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে তাদের জন্ম সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। বিভিন্ন সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, জন্ম ও মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সংশোধনী বিল পাশ করা হলে আধার কার্ড থেকে শুরু করে পাসপোর্ট তৈরি সমস্ত ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হবে জন্ম সার্টিফিকেট।

আরও পড়ুন:- পশ্চিমবঙ্গে ধেয়ে আসছে নতুন নিম্নচাপ, কোন কোন জেলায় বৃষ্টি হবে জেনে নিন।

এর পাশাপাশি আরো জানা গিয়েছে যে, ইতিপূর্বে জন্মের তারিখ সংশোধন থেকে শুরু করে জন্মস্থান প্রমাণ করার ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো, তবে এই নতুন সংশোধনী বিল কার্যকর করা হলে নাগরিকরা সেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। জন্ম ও মৃত্যু সার্টিফিকেট সংক্রান্ত এই নতুন সংশোধনী বিল অনুসারে, শুধুমাত্র আধার কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ডের মত উল্লেখযোগ্য নথি তৈরির ক্ষেত্রেই যে বার্থ সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে তা নয়, বিয়ের রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া সমস্ত ক্ষেত্রেই বার্থ সার্টিফিকেট অবশ্য প্রয়োজনীয়।

এর পাশাপাশি এই নতুন বিলে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য বেশ কতকগুলি নতুন নিয়মও কার্যকর করা হয়েছে। এই নতুন সংশোধনী বিল অনুসারে, জন্ম সার্টিফিকেট কিংবা মৃত্যু সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে রেজিস্টার যদি কাজে গাফিলতি করেন কিংবা রেজিস্টারের কাজ সংক্রান্ত যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে আবেদনকারী ব্যক্তি ৩০ দিনের উক্ত রেজিস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবেন। আর যেকোনো নাগরিকের অভিযোগ জানানোর ৯০ দিনের মধ্যে রেজিস্টারকে তার উত্তর দাখিল করতে হবে। অর্থাৎ এবার থেকে জন্ম সার্টিফিকেট ও মৃত্যু সার্টিফিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে বারংবার হয়রানির শিকার হতে হলে সাধারণ জনগণও রেজিস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর অধিকার পাবেন।