মাধ্যমিক পাশ হলেই পেয়ে যাবেন ওয়েসিস স্কলারশিপ! জেনে নিন আবেদন প্রক্রিয়া।

দারুণ সুখবর পড়ুয়াদের জন্য। ওয়েসিস স্কলারশিপে ফের আবেদন করার প্রক্রিয়া চালু হল পশ্চিমবঙ্গে। এই পোর্টাল বন্ধ ছিল বেশ কয়েক মাস ধরেই,সেই তথ্য অনেকেই জানেন। রাজ্যের একাধিক ছাত্র-ছাত্রী রাজ্য সরকারের ওয়েসিস স্কলারশিপের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন। এই স্কলারশিপ চালু করা হয়েছিল রাজ্যের তপশিলি জাতি এবং উপজাতিভুক্ত পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্য করার জন্যই। অল্প মেধার ছাত্র-ছাত্রীরাও বিশেষ শর্তে এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক ‘OASIS Scholarship’-র খুঁটিনাটি তথ্য:

ওয়েসিস স্কলারশিপ

প্রয়োজনীয় নথিপত্র হিসেবে ওয়েসিস পোর্টালে আবেদনের ক্ষেত্রে যা যা লাগবে:
১. শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার মার্কশিট কপি
২. ব্যাঙ্কের একাউন্ট
৩. জন্ম তারিখের প্রমাণ
৪. আয়ের শংসাপত্র
৫. জাতি শংসাপত্র

এই সমস্ত তথ্য যাচাই করার পরেই আবেদন পত্রের কপি নিজ নিজ ব্লক অফিস/ সাব-ডিভিশন অফিস/ ডিডব্লিউও কোলকাতা অফিসে জমা করতে হবে। আবেদন করার আগে এই এই নিয়মগুলি সঠিকভাবে পড়ে নেবেন –

1) স্কলারশিপের ফর্মটি পূরণ করার সময় সঠিক স্থানে জাতিসংশাপত্রের নম্বরটি ইনপুট করতে হবে।
প্রার্থীর নিজস্ব নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। এই ওয়েসিস স্কলারশিপের টাকা প্রার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ঢুকে যাবে।
2) ওয়েসিস স্কলারশিপে আবেদন করার সময় প্রার্থীর নাম আধার কার্ডের নাম এবং কাস্ট সার্টিফিকেটের নাম এক থাকা বাঞ্ছনীয়।

3) যদি কোনো ব্যক্তি ভুল তথ্য দিয়ে এই স্কলারশিপের টাকা পেয়ে থাকে তবে ধরা পড়লে তার টাকা পুনরুদ্ধার করা হবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
4) একজন প্রার্থী একবারের বেশি এই স্কলারশীপে আবেদন করতে পারবেন না। যদি একজন প্রার্থী একের বেশি অর্থাৎ দুই বার এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেন তবে সে ক্ষেত্রে দুটো আবেদনই বাতিল হয়ে যাবে।

inspiri scholarship 1

5) বাংলার শিক্ষা পোর্টালে আবেদনকারীর যে নামটি রয়েছে সেই নামের সঙ্গে আধার কার্ডের নাম এক হওয়া বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে বাংলার শিক্ষা পোর্টালের সাথে যদি আধার কার্ডের নাম ভিন্ন হয় সেক্ষেত্রে পড়ুয়াদের নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে নামটি ঠিক করার ব্যবস্থা করতে হবে।

উল্লেখ্য,এই আবেদনের ক্ষেত্রে “করণীয় ও বর্জনীয়” হিসেবে বেশ কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে পোর্টালে। পড়ুয়াদের নিজ নিজ জাতি শংসাপত্রের নম্বর ব্যবহার করেই পোর্টালে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে সঠিক আধার নম্বর, লিঙ্গ এবং জন্ম তারিখ সঠিকভাবে নির্দিষ্ট স্থানে দিতে হবে। পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপের ক্ষেত্রে কোর্সের নাম এবং প্রতিষ্ঠানের নাম সঠিক ভাবে নির্বাচন করতে হবে।

ইন্সপায়ার স্কলারশিপে আবেদন করলেই পড়ুয়াদের দেওয়া হবে 5 হাজার প্রতি মাসে।

সক্রিয় মোবাইল নম্বরের ব্যবহার, ব্যাঙ্ক একাউন্টের তথ্য এবং সর্বোপরি নিজের নাম যেন আধার কার্ড, শংসাপত্র এবং বাংলার শিক্ষা পোর্টালে একই থাকে, সেদিকে নজর রাখতেই হবে। প্রসঙ্গত, সরকারের তরফে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আরও একটি স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। এই স্কলারশিপটির নাম হল স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ন্যুনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়।

হিন্দু ধর্মের পড়ুয়াদের আবেদন করতে হয় https://svmcm.wbhed.gov.in/ সাইটে গিয়ে।
সংখ্যালঘুদের আবেদন করতে হয় https://wbmdfcscholarship.org/ সাইটে। এই স্কলারশিপটি পাওয়া যায় মাধ্যমিক পাস করার পর থেকে। একাদশ শ্রেণিতে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেও তা স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ আবেদনের যোগ্য নয়।

আবার উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর থেকে শুরু করে, যতদিন অব্দি পড়াশোনা চলবে ততদিন পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপের সুবিধা পেতে পারে। তবে, ওই প্রতিটি পরীক্ষায় অন্তত ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। তবে, মাস্টার্স ডিগ্রি করার সময়ে ৫৩ শতাংশ নম্বর পেলেও চলবে।

রাজ্যের অভাবী পড়ুয়াদের পড়াশোনা নিয়ে অভিনব উদ্যোগ। শুনলেই দারুন খুশি

স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের যোগ্যতা:
আবেদনকারী পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা এবং রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া হতে হবে। পারিবারিক আয় হতে হবে আড়াই লাখ টাকা নিচে। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেই আবেদন করা যায়। এছাড়াও মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমাসহ যেসমস্ত কোর্স রয়েছে, সেখানে ভর্তির জন্যও স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপে আবেদন করতে হবে। যারা কন্যাশ্রীর K1 ও K2 পেয়েছে, তারা যদি মাস্টার্সে ৪৫ শতাংশ মার্কস পেয়ে ভর্তি হয় তবে তারাও ২৪ হাজার বা ৩০ হাজার টাকা পাবে।

Leave a Comment