কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীর জন্য যে প্রকল্পগুলি চালু করেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা (PM Vishwakarma Yojana)। সরকারি এই প্রকল্প ভারতের প্রচুর মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে বিগত এক বছরের মধ্যে। সরকার মাঝেমধ্যে এমন কিছু প্রকল্প নিয়ে আসে যার দ্বারা সমাজের দরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষ উপকৃত হন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা (PM Vishwakarma Yojana) প্রকল্পটিও সে রকম। এই যোজনা দেশে বসবাসকারী মানুষকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে। এককালীন ২ লক্ষ টাকা পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট স্কিমের হাত ধরে। আজকের প্রতিবেদনে আমরা জানবো কেন্দ্রের তরফে চালু হওয়া প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা (PM Vishwakarma Yojana) প্রকল্প সম্পর্কে। আপনাদের সবার জন্য আজকের প্রতিবেদনে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।
PM Vishwakarma Yojana কি?
ভারতবর্ষে বেকারত্ব সমস্যা ঘোচাতে এবং দেশকে অনেক বেশি উন্নত করতে কেন্দ্রীয় সরকার চালু করেছে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্প (PM Vishwakarma Yojana)। এই বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে মাসিক ১৫ হাজার টাকা এবং ২ লক্ষ টাকার সুযোগ -সুবিধা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছিল গত বছর। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্পটি (PM Vishwakarma Yojana) সমাজের অনগ্রসর শ্রেণী, কারিগর ও অন্যান্যদের প্রভূত সাহায্য করেছে। প্রকল্পের জন্য সরকার ১৩ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্রকল্পে আবেদন জানানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে সমাজের অসংখ্য দরিদ্র মানুষ দের। মনে করা হচ্ছে, এই প্রকল্প সেই ব্যক্তিদের আলোয় নিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা (PM Viswakarma Yojana) প্রকল্পের আবেদন যোগ্যতা ও আবেদন পদ্ধতি জেনে নিন।
PM Vishwakarma Yojana কবে চালু হয়?
গত বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন দিল্লির লালকেল্লা থেকে দেশবাসীকে প্রকল্পের সুখবর পাঠায় মোদি সরকার। ওই বছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন অর্থাৎ ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্পটি (PM Vishwakarma Yojana) চালু হয়। ঔপ্রথম থেকেই বলা হয়েছিল প্রকল্পটির সমাজের জন্য অনেক বেশি উপকারী হবে। কিন্তু কি কি সুবিধা পাবেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে, সেটা এবার জেনে নেওয়া যাক। আসুন এই প্রকল্পের আবেদন যোগ্যতা, আবেদনের নিয়মাবলী জেনে নিন।
Ration Card: চাল, ডাল অনেক হল! এবার রেশনে সরষের তেল দিচ্ছে সরকার। কবে থেকে মিলবে? কারা পাবেন? জানুন
PM Vishwakarma Yojana প্রকল্পের সুবিধা কি?
১) এই প্রকল্পের দ্বারা প্রথম পর্যায়ে নেওয়া যাবে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ যার সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৫%।
২) দ্বিতীয় পর্যায়ে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে আবেদনকারীদের যেখানে ৫% সর্বোচ্চ সুদ দেবে সরকার।
৩) এই প্রকল্পে আবেদনকারী কারিগরদের স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হবে এবং প্রশিক্ষণ চলাকালীন বৃত্তি হিসেবে প্রতিদিন দেওয়া হবে ৫০০ টাকা করে।
৪) এখানে কারিগরেরা পাবেন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা শংসাপত্র এবং পরিচয়পত্র।
৫) এই যোজনায় প্রথম ধাপের ঋণের মেয়াদ ১৮ মাস এবং দ্বিতীয় ধাপের ঋণের মেয়াদ ৩০ মাস।
৬) এছাড়া, বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্পে টাকা ফেরতের ক্ষেত্রে প্রতি ডিজিটাল লেনদেনে এক টাকা করে ইনসেনটিভ দেবে সরকার।
কারা আবেদন করতে পারবেন?
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্পে আবেদন জানাতে পারবেন সমাজের দরিদ্র কারিগর শ্রেণীর মানুষজন। প্রধানত কারিগরদের অবস্থার উন্নতির জন্যই সরকারের এই প্রকল্প। প্রকল্পে আবেদন জানানোর যোগ্যতা থাকছে কুমোর, স্বর্ণকার, ধোপা, নাপিত, কারিগর, পুতুল প্রস্তুতকারক, কুমোর, কামার, নৌকা নির্মাতা, কাঠ মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, জুতোর কারিগর, মালা, পাথরের জিনিস, মাছের জাল প্রস্তুতকারক ইত্যাদি ব্যক্তিরা।
Prachesta Scheme – প্রচেষ্টা প্রকল্প কি? এই প্রকল্পের কি সুবিধা? কিভাবে আবেদন করবেন?
PM Vishyakarma Yojana যোগ্যতা
এবার জানা যাক, এই যোজনা তে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে:
১) এই প্রকল্পে আবেদন জানাতে পারবেন দেশের অনগ্রসর শ্রেণী এবং দরিদ্র মানুষেরা।
২) প্রকল্পে আবেদন জানানোর যোগ্যতা থাকছে কুমোর, স্বর্ণকার, ধোপা, নাপিত, কারিগর, পুতুল প্রস্তুতকারক, কুমোর, কামার, নৌকা নির্মাতা, কাঠ মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, জুতোর কারিগর, মালা, পাথরের জিনিস, মাছের জাল প্রস্তুতকারক ইত্যাদি ব্যক্তিরা।
৩) প্রকল্পের আবেদন জানাতে হলে আবেদনকারী প্রার্থীকে ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
৪) পরিবারের একজন সদস্য প্রকল্পে আবেদন জানতে পারবেন।
৫) আবেদনকারীর বয়স হতে হবে অন্ততপক্ষে 18 বছর। এছাড়াও যোজনার নিয়মগুলি ভালো করে পড়ে নিয়ে তবে আবেদন জমা করুন।
কি কি নথি লাগবে?
- আধার কার্ড
- ব্যাংকের পাসবুক
- প্যান কার্ড
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র
- আপনার চালু থাকা মোবাইল নাম্বার
- পাসপোর্ট সাইজ ফটোগ্রাফ ইত্যাদি।
অনলাইনে কিভাবে আবেদন করবেন?
Step 1: প্রকল্পে আবেদনের জন্য আপনাকে এই যোজনার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এ যেতে হবে, এবং সেখানে হোম পেজে যেতে হবে।
Step 2: এই ওয়েবসাইট থেকে রেজিস্ট্রেশন করে নেবেন। তারপর সঠিকভাবে সমস্ত তথ্য দিয়ে নিজ আবেদন সম্পন্ন করবেন।
Step 3: নিজের প্রয়োজনীয় নথিগুলি আপলোড করবেন। তারপর অ্যাপ্লিকেশনটি সাবমিট করে দেবেন।
আশা করা যায়, এই প্রকল্প দেশের সমস্ত কারিগর ও শিল্পীদের মর্যাদা প্রদান করার পাশাপাশি তাঁদের কর্মক্ষেত্রকে আরো প্রসারিত করে সকলের মুখে হাসি ফোটাবে।