সরকারি চাকরি মানেই আরামের দিনযাপন। প্রায় প্রতিটি রাজ্যের চিত্রই একই রকম। শুধু রাজ্য নয় কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও একই মনোভাব জনসাধারণের। অনেকদিন ধরেই সরকারি চাকরি (State Government) তে যুক্ত থাকা কর্মরতদের নজরে রেখেছিল সরকার (State Government)। বিশেষ করে স্কুল শিক্ষকদের। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, নিয়মকে তোয়াক্কা না করেই ইচ্ছেমতো কাজকর্ম করে যাচ্ছেন স্কুল শিক্ষকরা (State Government)।
নিয়মের ধার ধারছেন না কেউই। আর তাই এবার কড়াকড়ি শুরু করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার (State Government)। রাজ্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গৃহীত হলো নতুন পদক্ষেপ। নতুন নিয়ম মানতে হবে সবাইকে। আর নিয়ম না মানলে আরো বড় পদক্ষেপ নেবে সরকার (State Government) শিক্ষকদের বেতন, অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধাতেও কোপ পড়তে পারে। এখন দেখে নেওয়া যাক, রাজ্য সরকার (State Government) নতুন কোন নিয়ম জারি করেছে।
State Government New Rule 2024
বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে স্কুল শিক্ষকরা স্কুলের টাইমে পঠনপাঠন ব্যতীত অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন। অধিকাংশ সময় বেশ কিছু অফিসিয়াল কাজ এমনকি অ্যাকাডেমিক কাজও থাকে। আর এসব অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই মিস হয়ে যায় ক্লাস। আর ক্লাস মিস হলে পিছিয়ে পড়ে সিলেবাস। বিভিন্ন সময় এই কারণে সমস্যায় পড়তে হয় স্কুল পড়ুয়াদের।
এবার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার (অনেক সময়ই দেখা যায় স্কুল শিক্ষকরা (State Government) চলতি বছরে গৃহীত হলো আরো কড়া পদক্ষেপ। জানা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দপ্তর সম্প্রতি এই বিষয়ে সবাইকে জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষককে রাজ্য সরকারের নতুন নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই অবহিত হতে হবে। নচেৎ সমস্যা বাড়বে। গত কয়েক মাসে লাগাতার ছুটি চলেছে রাজ্যে। একদিকে লোকসভা ভোট, একই সাথে গরমের ছুটি মিলিয়ে টানা বহুদিন রাজ্যের সমস্ত স্কুলে পঠন পাঠন বন্ধ ছিল।
তার জেরে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে সিলেবাস, ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন পাঠনে দেখা গিয়েছে ঘাটতি। এদিকে সামনেই চলে এসেছে পরীক্ষা, কিন্তু একটানা স্কুল বন্ধের কারণেপরীক্ষার সিলেবাস বাকি রয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা যদি শিক্ষাদান ছাড়া অন্য কোনো কাজে ফের ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাহলে আরো সমস্যায় পড়বেন পড়ুয়ারা। ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে তার জন্য কড়া পদক্ষেপের ব্যবস্থা হচ্ছে রাজ্যে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে।
শিক্ষকদের জন্য জারি হল নতুন নিয়ম!
সূত্রের খবর, সম্প্রতি স্কুল শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন। নোটিশের মাধ্যমে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে স্কুল চলাকালীন অর্থাৎ স্কুলের সময় সীমার মধ্যে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা অন্য কোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন না অথবা অন্য কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। যদি বিশেষ কোনো কারণে কখনও কোনো দরকার পড়ে তাহলে সেই বিষয়ে আগে অনুমতি নিতে হবে, তারপর তিনি সেই কাজ করতে পারেন।
শিক্ষকদের ছুটি সংক্রান্ত নির্দেশ!
রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে এও জানানো হয়েছে যে, যদি পশ্চিমবঙ্গের একজন স্কুল শিক্ষক সরকারি কোনও নির্দেশ, নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ ইত্যাদি ছাড়া অন্য কোনও কারণে তিনি যদি স্কুল সময়ে ছুটি নেন, তাহলে অবশ্যই তাঁকে অনুমতি নিতে হবে প্রধান শিক্ষক বা স্কুলের কার্যকরী সমিতির থেকে।
এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে সকল শিক্ষকদের জন্যই। যদি কোনো শিক্ষক এই নিয়ম ভাঙেন, নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বিভাগীয় তদন্ত এর আওতায়। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে ছুটি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে আরো বেশি কড়া পদক্ষেপ নিল সরকার। সরকারের এই নির্দেশ মানতে হবে প্রত্যেক শিক্ষককে!
তবে মনে রাখবেন এখানেই শেষ নয়, স্কুল টাইমে শিক্ষকদের কাজ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে যে কড়া পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে, ছুটি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেকটি হুবহু মানতে হবে। কারণ গোটা বিষয়টির ওপর চলবে নজরদারি। রাজ্যের একজন শিক্ষক স্কুলের সময় অন্য কাজ কিছুতেই করতে পারবেন না।
স্কুল শিক্ষককে মানতে হবে আরও একটি নির্দেশ। একজন শিক্ষক বা শিক্ষা কর্মীকে প্রত্যেক মাসে অন্য কোনো কাজ চলছে কিনা সেই সংক্রান্ত তথ্য স্যালারি রিকুইজেশন স্লিপের সঙ্গে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিকট জমা দিতে হবে। তথ্যের ওপর বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গে বক্তব্য রেখেছেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল মহাশয়। তিনি বলেছেন যে, “২০১৮ সালে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের জন্য যে আচরণ বিধি চালু করা হয়েছিল তাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক নিয়মের কথাই উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে,সরকার এই আচরণবিধিগুলি নতুন করে কার্যকরী করার ক্ষেত্রে কতটা আগ্রহী তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েই যায়। যার প্রধান কারণ হলো, শাসক ঘনিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা কোনো নিয়ম না মেনে নিজেদের মতো করেই চলেন।