পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকল্পগুলি সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে অত্যন্ত উপকারের। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সকল প্রকল্পের শুরু করেছিলেন তা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও সমাদৃত। কন্যাশ্রী ও লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের খ্যাতি আমাদের জানা।
এছাড়াও রাজ্য সরকার সমাজের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে দের জন্য চালু করেন রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa)। চালু হওয়ার পর থেকে সরকারের রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa) যথেষ্টই জনপ্রিয় হয়েছে। সমাজের বহু দুঃস্থ পরিবারের মেয়েদের বিয়ের চিন্তা দূরীভূত হয়েছে। বাবা মা অনেকটাই নিশ্চিন্ত হয়েছেন।
সরকারের রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa) সেইসব পরিবার এর কাছে আশীর্বাদের মতো। তবে এবার রাজ্য সরকার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর সেই সিদ্ধান্ত রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa)-কে কেন্দ্র করে। সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্ত আসলে কি? কতটা উপকৃত হবেন বাংলার জনসাধারণ?
WB Rupashree Prakalpa 2024
প্রথমেই প্রশ্ন হলো রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa) আসলে কি? পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের দরিদ্র পরিবারগুলিকে তাঁদের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য এককালীন ভাতা দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে, সেটাই রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa) নামে পরিচিত। এই প্রকল্পের আওতায় পরিবারগুলিকে ২৫ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য করা হয়।
সরকারের এই স্কিমে আবেদন জানানোর জন্য অনলাইন কিংবা অফলাইনে আবেদন জানানো যাবে। তাছাড়াও অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের মতো রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। সম্পূর্ণ জানতে এই প্রতিবেদন অবশ্যই পড়ে নিন।
Rupashree Prakalpa Application 2024
রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন জানানোর জন্য তার অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে অনলাইন নয়তো অফলাইন মাধ্যমে। তারপর সমস্ত তথ্য যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে, ডকুমেন্টগুলি সঠিকভাবে সাবমিট করতে হবে। আর তাহলেই সেই ব্যক্তির আবেদন বিবেচনা করে এপ্লিকেশন অ্যাপ্রুভড করা হবে, এবং মেয়ের বিয়ের জন্য তিনি সরকারের তরফে ২৫ হাজার টাকার অর্থ সাহায্য পাবেন। বর্তমানে, রাজ্য সরকার রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa) নিয়ে নতুন নির্দেশ জারি করেছে। এই নির্দেশে কি বলা হয়েছে, এবার সেটাই জেনে নেব আমরা।
‘রূপশ্রী প্রকল্প’ নিয়ে সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত
সরকারের তরফে যে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে বাংলার কন্যাদের বিয়ের আগেই রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা পৌঁছে দিতে হবে পাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আর তা যদি না হয়, তবে খুব দেরি হলেও পাত্রীর বিয়ের দিনেই প্রকল্পের টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে। সম্প্রতি দফতরের আধিকারিকরা একটি ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সরকারের এই নতুন নির্দেশ সব জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছেন।
আসলে রাজ্য সরকার ‘দুয়ারে সরকার’ অভিযানের একটি অন্যতম কর্মসূচি হিসেবে বেশ কিছু পদক্ষেপ ঠিক করেছে। সরকারের তরফে ঠিক করা হয়েছে, সব রকম প্রকল্পের আবেদন ঠিক কোন পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা এবার থেকে জানতে পারবেন সংশ্লিষ্ট স্কিমের আবেদনকারী নিজেই। অনলাইনে বাড়িতে বসেই জানা যাবে এসব বিষয়। আর সেই তালিকা থেকে বাদ নেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পও।
সূত্রের খবর, রাজ্যের সরকারি অফিসারদের মধ্যে অনেকেই দাবি তুলেছিলেন, এতদিন সরকারি প্রকল্পের আবেদন যাচাইয়ের কাজ চলত অত্যন্ত শ্লথ গতিতে। আর সেই সরকারি আধিকারিকদের গাফিলতি যথেষ্টই ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যার ফলে অনেকেরই টাকা, অনেক প্রকল্পের টাকা পড়ে থাকছিল বকেয়া হিসেবে। রাজ্যের বহু আবেদনকারী সরকারি প্রকল্পের জন্য আবেদন করলেও প্রকল্পের সুবিধা থেকে অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছিল।
Ration Card: বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া অ্যাকশন। রেশনের নিয়মে বড় বদল!
তাই আর এই ক্ষেত্রে আর কোনোভাবেই গাফিলতি চায়না রাজ্য সরকার। কাজে গতি আনতে সরকারের তরফে নেওয়া হলো এই উদ্যোগ। নতুন সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, বিয়ের দিন পেরিয়ে গেলে রূপশ্রী প্রকল্পের তথ্য আর আপলোড করা যাবে না। এই প্রকল্পের আবেদনকারীদের অতি শীঘ্রই পাঠিয়ে দিতে হবে প্রকল্পের অর্থ সাহায্য।
প্রসঙ্গত, শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে রূপশ্রী প্রকল্পের নতুন নিয়ম। সাধারণত এতদিন এই প্রকল্পের আবেদনকারীরা অভিযোগ জানাচ্ছিলেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিয়ের পর মিলছে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা। আবার অনেকেই বলছেন, বিয়ের কয়েক বছর পরে টাকা পেয়েছেন আবেদনকারী।
আর এই সকল ক্ষেত্রে দেরি হওয়ার কারণ ছিল সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আবেদনপত্র সঠিকভাবে যাচাই করে না উঠতে পারা। তাই এবার তড়িঘড়ি নিয়মে বদল আনা হলো। আশা করা যাচ্ছে এই সিদ্ধান্তের পর উপকৃত হবেন বাংলার বহু দরিদ্র পরিবারের মানুষ। বহু বাবা-মা তাদের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চিন্ত হবেন। তাই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি সকলেই।