পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) অধিকাংশ মানুষেরই বাহন এখন গাড়ি। একটা সময় যা বিলাসিতা ছিল একটা সময় যা বিলাসিতা ছিল, এখন সেটাই যেন হয়ে গেছে নেসেসিটি। তবে রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ি বায়ু দূষণের কারণ। পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) রাস্তায় এখন মানুষ কম গাড়ির সংখ্যা বেশি। যার জন্য অনেকেই অভিযোগ জানান। তবে গাড়ির মালিকরা বায়ু দূষণ নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ।
আর তাই এবার বড়সড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য। এই রাজ্যের (West Bengal) সমস্ত গাড়ির মালিকদের বাড়ছে খরচ। চার চাকা হোক, তিন চাকা কিংবা দুই চাকা এবার থেকে প্রত্যেকটি গাড়িতেই করতে হবে ধোঁয়া পরীক্ষা। কড়া নির্দেশ রাজ্যের (West Bengal) সূত্রের খবর দ্রুত বাড়তে চলেছে ধোঁয়া পরীক্ষার খরচ। জানা যাচ্ছে সবকিছু ঠিক থাকলে গত গত কয়েক মাসের মধ্যেই কলকাতা-সহ বাংলা জুড়ে ধোঁয়া পরীক্ষার খরচ বাড়বে।
যে হারে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, সেটা চিন্তার পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এখন ভাবনাচিন্তা না করলেই পরে গিয়ে মুশকিল। তাই বর্তমানে সমস্ত দেশগুলি দূষণ প্রতিরোধ নিয়ে ভাবছে। দূষণ আটকানোর জন্য নানান পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। আমাদের ভারত পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো দূষণ প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। যথারীতি ভারতের রাজ্য গুলিতে মাঝেমধ্যেই নেওয়া হচ্ছে নানান পদক্ষেপ।
কেবলমাত্র বায়ুদূষণ নয়, জল দূষণ, ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দূষণ প্রতিরোধ প্রধান হয়ে উঠছে। যার এক পদক্ষেপ হিসেবে ধোঁয়া পরীক্ষাকে চিহ্নিত করা যায়। ধোঁয়া পরীক্ষার জন্য খরচ বাড়ছে রাজ্যে। শুধু তাই নয়, এবার থেকে প্রত্যেকটি গাড়িতে খুব তাড়াতাড়ি বাধ্যতামূলক হতে চলেছে ধোঁয়া পরীক্ষা।
West Bengal: রাজ্যবাসীর গাড়ি থাকলেই বাড়ছে খরচ!
বলাই বাহুল্য আমাদের পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে ধোঁয়া পরীক্ষা বাধ্যতামূলক প্রতিটি গাড়িতে। আর সেটা আজকে নতুন নয় অনেক দিন ধরেই। এ বিষয়ে এর আগেও পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। নিয়ম বলছে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর প্রত্যেকটি গাড়িকে ধোঁয়া পরীক্ষা করিয়ে তার শংসাপত্র সংগ্রহ করে নিতে হয়।
আগে ধোঁয়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহার হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই ধোঁয়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে রাজ্যের ভাবনাচিন্তা প্রতিফলিত হচ্ছে। সূত্রের খবর, রাজ্যের সর্বত্র এখন কারচুপির প্রকোপ। আর তাই প্রধানত কারচুপি রুখতে নেওয়া হলো এই পদক্ষেপ। পাশাপাশি জানা যাচ্ছে, আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য। এবার নাকি ধোঁয়া পরীক্ষা বাবদ খরচেও আসতে চলেছে পরিবর্তন।
আসলে এতদিন যেভাবে ধোঁয়া পরীক্ষা হতো তাতে ধোঁয়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে খুব বেশি খরচ হত না। তবে এবার খুব শিগগির সেই খরচও বাড়তে চলেছে। অতএব জনতার পকেট থেকে খসতে চলেছে অতিরিক্ত টাকা। আর যেহেতু ধোঁয়া পরীক্ষা বাধ্যতামূলক, তাই প্রত্যেকটি গাড়িতে এই পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
অন্তত এমনই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। ইতোমধ্যে জানা যাচ্ছে, এই ধোঁয়া পরীক্ষার খরচ বাড়ানোর জন্য পরিবহন দফতর লোকসভা ভোটের আগেই অর্থদফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। আর তাতে সায় দিয়েছে রাজ্য অর্থ দফতর। যার ফলে ধরে নেয়াই যায় অতি দ্রুত ধোঁয়া পরীক্ষার খরচ রাজ্যে বাড়তে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কলকাতা সহ রাজ্য জুড়ে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাড়বে খরচ।
তবে, এখন একটা বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে, পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দফতর বেশি রাজস্ব আদায়ের জন্যই কি খরচ বাড়াতে চায়? নাকি এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আরও কোনো কারণ? যদিও সংশ্লিষ্ট বিষয়টি উল্লেখ করে রাজ্যের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র রাজস্ব আদায় নয়, এই নতুন গৃহীত হওয়া ব্যবস্থায় ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্র গুলির বিরুদ্ধে হয়তো কোনও অভিযোগ থাকবে না। বিশেষ করে সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে।পাশাপাশি, যদি কোনও ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি বা গাফিলতি ধরা পড়ে তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ হবে।
কতটা খরচ বাড়তে চলেছে?
মোটামুটি একটা হিসেব থেকে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে সমস্ত চার চাকা গাড়ির ক্ষেত্রে আগে যেখানে ধোঁয়া পরীক্ষায় জন্য খরচ পড়ত ১০০ টাকা করে। এবার নাকি তা বৃদ্ধি পেয়ে তা ১৫০ টাকা করা হতে পারে। অন্যদিকে, তিন চাকার গাড়ির ক্ষেত্রেও ধোঁয়া পরীক্ষার খরচ ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে খরচ বাড়িয়ে করা হতে পারে ১২০ টাকা।
দুই চাকার বাহন যথা বাইক-স্কুটারের ক্ষেত্রে খরচ বাড়বে ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ টাকা। সবশেষে উল্লেখ করতে হবে। পণ্যবাহী ও ট্রাকের কথা। এই যানবাহন গুলির ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে দ্বিগুণ। অর্থাৎ যা জানা যাচ্ছে গাড়ির আকার এবং বহনের উপর নির্ভর করে এই খরচ নাকি বাড়বে। আর এই খরচের সঙ্গে নাকি যুক্ত থাকবে জিএসটি। ফলে ধোঁয়া পরীক্ষা করার জন্য এবার থেকে একলাফে খরচ অনেকটাই বাড়ছে।